ভাইরাস এবং লকডাউন যে দেশের দরিদ্র সমাজের প্রতি কী ভীষণ ছাপ ফেলেছে তার ছবি আস্তে আস্তে প্রকাশ্যে আসতে শুরু করেছে। মায়ের পাওয়া পেনশনের টাকাতেই যেহেতু সংসার এখন চলছে তাই সেই টাকা তোলার জন্য ১০০ বছরের মা–কে খাটিয়ায় শুইয়ে টেনে ব্যাঙ্কে নিয়ে গেলেন এক বৃদ্ধা। ঘটনাটি ঘটেছিল বুধবার ওডিশার নুয়াপাড়া জেলার খারিয়ার ব্লকের বরাগন গ্রামে। ঘটনার ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় আপলোড হতেই তা ভাইরাল হয়। তাতেই দেশের চরম দারিদ্রের ছবি ফুটে উঠেছে। সূত্রের খবর, পেনশন দেওয়ার আগে লাভে বাঘেল নামে ওই শতায়ু বৃদ্ধা যে জীবিত তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ চেয়েছিল উৎকল গ্রাম্য ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। সেকারণেই ঠা ঠা রোদে চলচ্ছক্তিহীন মা–কে ওইভাবে খাটিয়ায় শুইয়ে নিজেই টেনে নিয়ে যান তাঁর ৭০ বছরের মেয়ে গুঞ্জা দেবী। কারণ অ্যাম্বুল্যান্স বা গাড়িতে নিয়ে যাওয়ার মতো অর্থ তাঁর কাছে ছিল না। লাভে মোট ১৫০০ টাকা পেনশন পান। লকডাউনের পর কর্মহীন সংসারে ওই টাকার দরকার ছিল গুঞ্জা দেবীর। তবে মা–কে নিয়ে ওইভাবে ব্যাঙ্কে পৌঁছতেই ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ তৎক্ষণাৎ তাঁর পেনশনের টাকা দিয়ে দেন বলে জানিয়েছেন গুঞ্জা দেবী। নুয়াপাড়ার বিধায়ক রাজু ঢোলাকিয়া গোটা ঘটনার নিন্দা করলেও ওডিশা সরকারকেই ওই পরিবারকে সাহায্য করার দাবি জানিয়েছেন। আর রাজুর এই কাজের তীব্র সমালোচনা করে আমজনতা থেকে শুরু করে রাজনৈতিক ব্যক্তিরা বলেছেন, স্থানীয় বিধায়ক হয়ে ঘটনা জানতে পেরেও কেন রাজু নিজে কোনও দায়িত্ব না নিয়ে রাজ্য সরকারের কোর্টে বল ঠেলেছেন। খারিয়ারের বিধায়ক অধিরাজ পাণিগ্রাহী গোটা ঘটনায় কঠোর সমালোচনা করে ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন। তাঁর অভিযোগ, প্রায় তিন মাস ধরে গুঞ্জা দেবীকে তাঁর মায়ের জীবিত থাকার প্রমাণ চাইছিল ব্যাঙ্ক কর্তৃপক্ষ। তারপরই রবিবার উৎকল গ্রাম্য ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজার পাণিগ্রাহীর সঙ্গে বরাগন শাখায় পৌঁছে ঘটনার তদন্তের নির্দেশ দেন। এই ঘটনায় নড়েচড়ে বসেছে ওডিশা সরকার। রাজ্যের মুখ্যসচিব রাজ্যের সব সরকারি, বেসরকারি এবং গ্রামীণ ব্যাঙ্কের রিজিওনাল ম্যানেজারদের চিঠি লিখে নির্দেশ দিয়েছেন যাতে তাঁরা বৃদ্ধ গ্রাহকদের জন্য প্রত্যেকের ঘরে ঘরে যান পরিষেবা দিতে। ছ